তাড়াতাড়ি বুড়ো-বুড়ি হতে না চাইলে এই ১২টি খাবার খান
পরিসংখ্যান বলছে আমেরিকায় বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ সংক্রান্ত গবেষণায় বিনিয়োগের মাত্রা ছাড়িয়েছে ৮ বিলিয়ান মার্কিন ডলার। এ থেকেই প্রমাণ হয়ে যায় যে, বুড়ো হতে চায় না এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। আপনিও যদি তাদেরই একজন হয়ে থাকেন তাহলে জেনে নিনি এমন কিছু খাবার সম্পর্কে যেগুলো খাওয়া শুরু করলে ত্বকের বয়স তো কমবেই, সেই সঙ্গে জিনের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করবে যে তার প্রভাবে শরীরেরও বয়স কমবে চোখে পড়ার মতো।
প্রসঙ্গত, এই খাবারগুলি খেলে কিন্তু বাস্তবিকই বয়স ধরে রাখা সম্ভব। কথাটা শুনে বিশ্বাস হচ্ছে না নিশ্চয়? ভাবছেন খাবারের সঙ্গে বয়সের কী সম্পর্ক, তাই তো! আসলে বেশ কিছু খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেমন ধরুন নিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা বয়স তো কমায়, সেই সঙ্গে শরীরকেও চাঙ্গা রাখে। শুধু তাই নয়, একাধিক মারণ রোগকে ধারে কাছে ঘেঁষতে দেয় না। ফলে আয়ু বাড়তে সময় লাগে না। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী কী খাবারের মধ্যে শরীরের বয়স কমানোর ক্ষমতা রয়েছে…
১. দই
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন দই খাওয়া শুরু করলে দেহের ভেতরে প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়, সেই সঙ্গে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে রিবোফ্লাবিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি১২ এর মাত্রাও বাড়তে থাকে, যার প্রভাবে শরীরের বয়স কমে চোখে পড়ার মতো। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
২. অলিভ অয়েল
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটে ভরপুর এই তেলটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করার পাশাপাশি বয়সজনিত নানা অসুবিধা কমাতেও দারুন কাজে আসে।
৩. জাম
এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা বয়স বাড়ার গতিকে আটকায়। শুধু তাই নয়, ক্র্যানবেরি, স্ট্রবেরি এবং অবশ্যই ব্ল্যাক বেরি শরীরের সার্বিক গঠনের উন্নতি ঘটাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই প্রতিদিন যদি এই ফলটা খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের ভাঙন রোধ হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর এবং ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করে।
৪. বাদাম
শরীরকে ভাল রাখতে উপকারি ফ্যাটেরও প্রয়োজন পড়ে। তাই প্রতিদিন বাদাম খান মুঠো ভরে। এতে উপকারি ফ্যাটের পাশাপাশি রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে দারুন কাজে আসে।
৫. সবুজ শাকসবজি
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কপি পাতা এবং পালং শাকে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট নামে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা সেলের ক্ষয় আটকে ত্বক এবং শরীরে বয়স ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. শস্যদানা
ঝাড়াই করা শস্য দানার পরিবর্তে যদি হোল গ্রেন খাওয়া যায়, তাহলে বয়স বাড়ার হার অনেকটাই হ্রাস পায়। শুধু তাই নয় এই ধরনের খাবার বয়সজনিত নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কাও কমায়, বিশেষত হার্টের রোগ হওয়ার পথ আটকায়। প্রসঙ্গত, আস্ত শস্যদানায় মিনারেল, ভিটামিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে থাকে। ফলে দেহের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হতেও সময় লাগে না।
৭. আঙুর
রেজভারেটল নামে একটি যৌগ রয়েছে এই ফলটিতে, যা একাধারে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি- কোয়াগুলেন্ট। এই উপাদান দুটি হার্টকে ভালো রাখে। আর যেমনটা আগেও বলা হয়েছে যে শরীর তখনই চাঙ্গা থাকে, যখন হার্ট সুস্থ থাকে। তাই সুস্থ, রোগমুক্ত শরীরের অধিকারি হয়ে উঠতে প্রতিদিন একবাটি করে আঙুর খাওয়া মাস্ট!
৮.মটরশুঁটি
হার্টকে নানা ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মটরশুঁটির কোনো বিকল্প নেই। তাই আপনি যদি দীর্ঘদিন জোয়ান থাকতে চান, তাহলে হার্টকে সুস্থ রাখতেই হবে। তাহলেই দেখবেন শরীরের বয়স কমতে থাকবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে এই খাবারটি।
৯. গ্রিন টি
প্রতিদিন এক কাপ করে গ্রিন টি পান করলে শরীরে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রবেশ ঘটে। আর যেমনটা আমাদের সকলেই জানা যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যান্সার, হার্ট ডিজিজ, এমনকি অ্যালঝাইমার রোগ আটকাতে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
১০. টমেটো
লাইকোপেন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে টমেটোতে, যা ত্বকের বয়স কমায়। শুধু তাই নয়, স্টমাক, লাং এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে প্রতিরোধ করতেও এই সবজিটি দারুন কাজে আসে।
১১. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
শরীরের বয়স কমাতে এই উপাদানটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই দেহকে রোগমুক্ত রাখার পাশাপাশি শরীর এবং ত্বকের বয়স যদি ধরে রাখতে চান, তাহলে রোজের ডায়েটে মটরশুঁটি, ডাল, ব্রকলি, ছোলা, অ্যাভোকাডো এবং ওটমিলের মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে ভুলবেন না যেন!
১২. মাছ
যেমনটা আমরা সকলেই জানি যে মাছে রয়েছে ওমেগা-ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদানটি শরীরের অন্দরে যে কোনও ধরনের প্রদাহ কমাতে দারুন কাজে আসে। ফলে শরীরের বয়স বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই সপ্তাহে দুবার অন্তত মাছ খান। এমনটা করলে দেখবেন স্ট্রোক এবং অ্যালঝাইমারের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমবে। ফলে বাড়বে আয়ু।