কেন সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ঝাপসা মনে হয়? Why CC Tv Footage Seen Not Clear
বর্তমান টেকনোলজি যেখানে এতটা উন্নত সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরার ক্ষেত্রে এই দশা কেন। যেখানে রাতের অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে এই সিসিটিভি ক্যামেরা। বন্ধুরা আজকের এই টিউন আমি এই বিষয়টিকে নিয়েই আপনাদের সামনে আলোচনা করার চেষ্টা করব। আজকের এই টিউনের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন যে, আজকের দিনে প্রযুক্তি এতটা উন্নত হবার পরও কেন সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও কোয়ালিটি এতটা খারাপ মনে হয়। এজন্য টিউনটি সম্পূর্ণ অবশ্যই দেখুন।
সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও কোয়ালিটি কেন খারাপ?
যদিও সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে তোলা ভিডিও ঠিক ভাবেই বোঝা যায়। তবে হলে সমস্যা হচ্ছে এটি রেজুলেশন আমাদের মোবাইল দিয়ে তোলা ভিডিও কিংবা ডিএসএলআর ক্যামেরা দিয়ে তোলা ভিডিওর মতো হয় না। যেখানে এসবের তুলনায় ভিডিও কোয়ালিটি থাকে অনেকে নিম্নমানের। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও যে কোয়ালিটি থাকে তা দিয়ে একজন অপরাধীকে কিংবা কোন কিছুতে নজরদারি করা সম্ভব। তবুও আমাদের ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে, সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও কোয়ালিটি কেন খারাপ।
সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও কোয়ালিটি এতটা খারাপ হবার পেছনে প্রথমে যে কারণটি তা হচ্ছে, সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করার ক্ষেত্রে ইচ্ছে করেই এখানে লো রেজুলেশনের ভিডিও রেকর্ড করা হয়। এরপর ভিডিও রেকর্ড করার পর সেটিকে খুবই কমপ্রেস বা সংকুচিত করা হয়, যার কারণে ভিডিওর ইমেজ কোয়ালিটি ও অনেক বাজে হয়ে যায়। এখানে ভিডিওকে লো রেজুলেশনে কমপ্রেস করার কারণ হচ্ছে, ভিডিও ফুটেজ এর ফাইল সাইজ কমানো। এবার এই প্রশ্ন আসতে পারে যে কেনইবা ফাইল সাইজ কমানোর জন্য ভিডিও কোয়ালিটি খারাপ করা হয়? চলুন, এই বিষয়ে এবার জেনে নেওয়া যাক।
তো দেখুন, একই প্রতিষ্ঠান বা সংস্থায় অনেকগুলো সিসিটিভি ক্যামেরা থাকতে পারে। যেখানে এসব সিসিটিভি ক্যামেরা দিনের 24 ঘন্টা এবং সপ্তাহের সাত দিন চালু থাকে, বলতে গেলে সবকিছু সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো পুরো বছর জুড়ে এবং আজীবনের জন্য ভিডিও রেকর্ড করতে থাকে। এখানে ভিডিও রেকর্ড করার পর সেটিকে অবশ্যই কোথাও না কোথাও অবশ্যই স্টোর করে রাখতে হবে যাত করে সেগুলো পরবর্তীতে মনিটরিং করা যায় যে কোথায় কোন সময় কি হয়েছিল। এখানে নিজের কাছে হলে সেটিকে কোন হার্ডড্রাইভে স্টোর করতে হবে অথবা ইন্টারনেট ভিত্তিক হলে সেটিকে কোন সার্ভারে স্টোর করে রাখতে হবে। এখন সেই ভিডিওগুলো যদি হাই কোয়ালিটি তে রেকর্ড করা হয় এবং সেগুলো পরে যদি কোন রকমের কমপ্রেস বা সংকুচিত না করা হয়, তবে এক্ষেত্রে ভিডিওর সাইজ অনেক বেড়ে যাবে।
এক্ষেত্রে হাই কোয়ালিটিতে ভিডিও রেকর্ড করার পর দেখা যাবে যে ৫ ঘন্টার মধ্যেই একটি ১ টেরাবাইটের হার্ডডিস্ক পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। যেখানে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি একটি লিমিটেশন চলে আসে। আর এভাবে করে যদি প্রতিনিয়ত ভিডিও রেকর্ড করা হয় তবে সেই ভিডিও গুলোকে জমা করে রাখার জন্য দরকার বিশাল পরিমাণ হার্ড ড্রাইভ এর। কিন্তু কিভাবে করে আর কতই হার্ডডিক্স এ সেই ভিডিও গুলো জমা করে রাখবে? যেখানে দরকার হবে আনলিমিটেড স্টোরেজের।
যদি এটি ধরেও নেওয়া যায় যে, আনলিমিটেড স্টোরেজ রয়েছে; কিন্তু এক্ষেত্রে সবার জন্য কিন্তু আনলিমিটেড স্টোরেজের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। কেননা যেখানে প্রতিনিয়ত ভিডিও রেকর্ডিং হতেই চলেছে। আর এজন্যই সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও গুলোকে লো রেজুলেশনে রেকর্ড করা হয় এবং রেকর্ড করার পর সে গুলোকে সংকুচিত করা হয়। আর এ কারণেই সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও গুলো অনেক খারাপ হয়ে যায়।
একটি স্মার্টফোনের ক্যামেরাকে কখনোই আপনি তুলনা করতে পারবেন না কোন সিসিটিভি ক্যামেরার সঙ্গে। কেননা এই দুইটি ক্যামেরাই আলাদাভাবে আলাদা পরিবেশের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। স্মার্টফোনের ক্যামেরা গুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যে, আপনি যখন কোন ফটো ক্যামেরা দিয়ে তুলবেন তখন সেটি দেখে যেন আকর্ষণীয় মনে হয়। অন্যদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা ক্ষেত্রে এটি একেবারেই আলাদা। সিসিটিভি ক্যামেরা কে ডিজাইন করা হয় যে, সেটির ভিডিও কোয়ালিটি হোক না কেন ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট এটা নির্ভর করে না; কিন্তু চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে এটি যেন একটি ভালো ছবি দিতে পারে।
এখানে দিনের বেলা কিংবা রাতের বেলা যেন এটি ভালোভাবে তার সামনের ছবিগুলোকে ক্যাপচার করতে পারে শুধুমাত্র এজন্যই এটিকে স্পেশালভাবে ডিজাইন করা। যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরাতে নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়; যে কারণে সিসিটিভি ক্যামেরা টি রাতের বেলাতেও ভিডিও রেকর্ড করতে সক্ষম। যেমন ধরুন, কোন একজন ব্যক্তি কালো পোশাক পড়ে কালো মাক্স পড়ে চুরি করতে এসেছে। এই ক্ষেত্রে এই ভিডিওটি যদি আপনি মোবাইল দিয়ে রেকর্ড করতে চান তবে এটি অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে এবং আপনি যদি যেভাবে করে ভিডিও রেকর্ড ও করেন তবে এক্ষেত্রে হয়তোবা কিছুই বোঝা যাবে না। অন্যদিকে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার কথা বলতে গেলে সেটি এই দৃশ্যকে খুব ভালোভাবে ক্যাপচার করতে পারবে; কেননা ক্যামেরাটিকে এইভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে।
আরেকটি কারণ হতে পারে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও অনেক লো কোয়ালিটির এবং লো রেজুলেশনের মনে হয়; আর সেটি হচ্ছে ক্রপিং। তো দেখুন, একটি ক্যামেরা সবসময় ওয়াইড অ্যাঙ্গেল এ হয়, যেখানে ক্যামেরাটি অনেক জায়গা নিয়ে ভিডিও রেকর্ড করে। এক্ষেত্রে এখানে আপনাকে যখন সেই সেই ভিডিও দেখে কোন একটি অংশকে মার্ক করে দেখানো হবে তখন তখন সেটিকে অনেক ঝাপসা মনে হয়। আপনিসহ সিসিটিভির কোন ফুটেজ কোন নিউজ চ্যানেলে দেখতে পাবেন তখন সেই নিউজ চ্যানেলে কোন নির্দিষ্ট একটি অংশকে মার্ক করে দেখানো হয়। যেখানে সেই অংশটিকে Crop করা হয়।
এক্ষেত্রে কোনো একটি ভিডিওর মাঝে থেকে নির্দিষ্ট অংশটিকে কেটে নিলে সেই অংশটিকে স্বাভাবিকভাবেই ঝাপসা মনে হবে; কেননা সেখানে কম পিক্সেল রয়েছে। আর এভাবে করে যদি কোনো একটি অংশকে বারংবার জুম করা হয় তবে একটি পর্যায়ে গিয়ে সেটির পিক্সেল গুলো দেখা যাবে। আর এরকম ভিডিও কিন্তু আমরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং নিউজ চ্যানেলে দেখে থাকি। যার কারনে এর ভিডিও রেজুলেশন আরো কমে যায় এবং ইমেজ কোয়ালিটি একদমই লো মনে হয়। আর তখনই আমাদের সেই ভিডিওটিকে ঝাপসা মনে হয়।
এটি একটি সাধারণ ধারণা যে, আপনি যখন কোনো একটি ছবিকে জুম করতেই থাকবেন তখন সেটি একসময় পিক্সেলে গিয়ে জুম হতে থাকবে। ঠিক একই জিনিসটি সিসিটিভি ক্যামেরার ক্ষেত্রেও হয়। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিসিটিভির যেসব ফুটেজগুলো দেখে থাকি সেখানে হয়তোবা কোন গাড়ির নাম্বার কিংবা কোনো অপরাধীর ছবিকে দেখানো হয়। যেখানে পুরো ভিডিওটি থাকে না, বরং ভিডিওটির কিছু অংশ Crop করে দেখানো হয়। আর এজন্যই সিসিটিভির ফুটেজ কে অনেক লো রেজুলেশন মনে হয়।