নিউজিল্যান্ডের ভিসা পেতে চাইলে কি করতে হবে?
আপনি যদি ফুল টাইম শিক্ষার্থী হিসেবে নিউজিল্যান্ড পড়তে যেতে চান, তবে ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমে অবশ্যই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তার লিখিত প্রমাণপত্র এবং ভর্তি ফি জমা দেয়ার রিসিট ভিসা প্রসেসিং এর জন্য জমা দিতে হবে ভিসার আবেদনের জন্য।
যদি ৩ মাসের কম সময়ের কোনো কোর্সের জন্য যেতে চান তবে ভ্রমণের ভিসাতেই যেতে পারবেন। যদি তিন মাসের চেয়ে বেশি দিনের জন্য কোনো প্রফেসনাল কোর্সে ভর্তি হয়ে পড়তে যেতে চান তবে অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে হবে আপনাকে।
নিউজিল্যান্ড হাই কমিশন: বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ডের হাই কমিশন না থাকায় ভারতের মুম্বাই অথবা কোলকাতায় নিউজিল্যান্ডের ভিসা প্রোসেসিং অফিসে ভিসা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর জন্য যোগাযোগ করতে হবে। তাই বাংলাদেশ থেকে আবেদন করতে চাইলে ভারতের মুম্বাই অথবা কোলকাতায় অবস্থিত নিউজিল্যান্ডের ভিসা সংক্রান্ত অফিসের আপনার আবেদন পত্র জমা দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
নিউজিল্যান্ডের ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় তথ্য: আবেদনকারীর মূল পাসপোর্ট। আবেদনের সময় ভিসা আবেদনের সেন্টারে পাসপোর্ট হ্যান্ডলিং ফি এবং যদি অন্য আরো কোনো ধরণের চার্জ প্রযোজ্য হয় তবে তার রিসিপ জমা দিতে হবে।
অনলাইনে ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদন করার পর নিশ্চিত করলে ওয়েব-সাইট থেকে ঐ পেইজের প্রিন্ট কপিটি সংরক্ষণ করতে হবে।
আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এড্রেস, ভিসা প্রোসেসিং এর কাজ শেষ হওয়ার পর কাগজপত্র যে ঠিকানায় পাঠানো হবে তার ঠিকানা সঠিক ভাবে দিতে হবে।
আগেই বলা হয়েছে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের হাই কমিশনের অফিস নেই তাই বাংলাদেশীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হলে কোলকাতার কিংবা মুম্বাইয়ের নিউজিল্যান্ডের ভিসা প্রোসেসিং অফিসে আবেদন ফি জমা দিতে হবে। অনলাইনে আবেদন করলে আবেদনের জন্য $২৭০ মার্কিন ডলার জমা দিতে হবে।
পাসপোর্ট বাংলাদেশ থেকে ভারতের হাই-কমিশনে পৌঁছে দেওয়ার ফি হিসেবে বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য ১৩৭৪ ভারতীয় রুপির অথবা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৭২৭ টাকা টিটি সার্ভিসের (টেলি ট্রান্সপোর্ট) মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
ভিসা ও অন্যান্য ফি জমা দেওয়ার উপায়: ক্রেডিট কার্ড: ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড অথবা ইউনিয়ন-পে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ফি জমা দিতে পারেন। ডেবিট কার্ড: ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড অথবা ইউনিয়ন-পে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ফি জমা দিতে পারেন।
স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এর সম্ভাব্য সময়: স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এর জন্য সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ভিসা প্রসেসিং এর জন্য কতো দিন সময় লাগবে তা আবেদনকারীর তথ্য যাচাই এবং তথ্য মূল্যায়নের উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণত কত দিনের মধ্যে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ শেষ হতে পারে তা আবেদনের সময় জানিয়ে দেয়া হয়।
ভিসা আবেদনের জন্য ছবি:: পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি রঙ্গিন ছবি জমা দিতে হবে। ছবি ৬ মাসের বেশি পুরনো হওয়া চলবে না। ছবিতে কোনো ধরণের কোনো পরিবর্তন করা যাবে না ও আবেদনকারীর চেহারা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যেতে হবে। ছবির পটভূমি সাধারণ এবং হালকা রঙের হতে হবে কিন্তু সাদা রঙের পটভূমি হওয়া চলবে না।
মুখমণ্ডল ও চোখের উপরে কোনো চুল থাকা যাবে না। চোখ স্পষ্ট ভাবে বোঝা যেতে হবে। ছবি তোলার সময় কোনো সানগ্লাস, লেন্স ব্যবহার করা যাবে না। যদি আবেদনকারী চশমা ব্যবহার করেন তবে তাকে চশমা ছাড়া ছবি তুলতে হবে ভিসার আবেদনের জন্য।
মাথায় কোনো প্রকার টুপি অথবা মাথায় বাঁধার ফিতা অথবা কাপড় থাকা যাবে না। শুধু মাত্র ধর্মীয় ক্ষেত্রে এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট কারণে মাথায় কাপড়, টুপি অথবা ফিতা দেয়া যেতে পারে। অনলাইনে আবেদনের সময় – ছবি জেপিজি অথবা জেপিইজি ফরমেটে হতে হবে। সাইজ ৫০০ কিলোবাইট থেকে ১০ মেগাবাইট এর মধ্যে হতে হবে। আরো বিস্তারিত অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে জেনে নিতে পারেন।
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করার সময় যে কাগজপত্র গুলো দরকার হবে: নিউজিল্যান্ডে পড়তে যাবার মতো আর্থিক অবস্থা আছে তার প্রমাণপত্র। আবেদনকারীর পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট। জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট। একাডেমিক সার্টিফিকেট,ট্রান্সক্রিপ্ট, সুপারিশ পত্র, কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হলে তার প্রমাণপত্র।
নিউজিল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য IELTS স্কোর অবশ্যই সর্বনিন্ম ৬.০০ হতে হবে। তবে কিছু কিছু ভার্সিটিতে স্কোর ৫.৫০ ও গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা খুবই কম। অনলাইনে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে নিউজিল্যান্ড অভিবাসন বিষয়ক অফিসিয়াল পেইজে গিয়ে আপনি কোন ধরণের ভিসার জন্য আবেদন করতে চান সে সংশ্লিষ্ট সব তথ্যই পাবেন।
-স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন যে কোনো বয়সের শিক্ষার্থীই করতে পারে। -স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে নিউজিল্যান্ড পড়তে গেলেও আপনি পড়ার ফাঁকে কাজ করার অনুমতি পাবেন। প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা করে স্টুডেন্টদের জন্য কাজ করার অনুমতি দেওয়ার নিয়ম আছে নিউজিল্যান্ডে।
-নিউজিল্যান্ডে কাজ করতে হলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জমা দিতে হবে। সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ইতিহাস আছে এমন কারো জন্য নিউজিল্যান্ডের ভিসা দেওয়া হয় না। -ভিসার জন্য শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার প্রমাণপত্র হিসেবে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দিতে হতে পারে।
-ভিসা হয়ে যাবার পর যে কোনো সময় আপনি নিউজিল্যান্ড প্রবেশ করতে পারবেন।
-ভিসার মেয়াদ সাধারণত কোর্সের মেয়াদ যতদিন ততদিনের জন্য দেয়া হয়। কোর্সের মেয়াদ কোনো কারণে বর্ধিত হলে আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট অফিসে গিয়ে রিনিউ করে নিতে হবে। -কোর্সের মেয়াদ শেষ হলে যদি আরো কিছুদিন থাকতে চান তবে সব শর্ত পূরণ করলে রেসিডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
-অবশ্যই হেলথ ইন্সুরেন্স থাকতে হবে যতদিন আপনি শিক্ষার্থী হিসেবে নিউজিল্যান্ড থাকবেন। বেআইনি কোনো কিছু করলে পরবর্তীতে নিউজিল্যান্ড প্রবেশ করবার সমস্ত অধিকার হারাতে হতে পারে। আরো জানার জন্য নিউজিল্যান্ড অভিবাসন ওয়েবসাইটে ঘুরে আসতে পারেন।